Daily bangla news by JasHim News 24 all bd news live 24 hours in this field thanks for watching.

Tuesday, June 27, 2017

শেষ মুহূর্তের যাত্রায় উপচেপড়া ভিড় বাস লঞ্চ ট্রেনে By JasHim News

ঈদ সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে রাজধানী ছাড়ছে ঘরমুখো মানুষ। আজ থেকে ঈদের ছুটি শুরু হলেও শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় অনেকেই দুদিন আগেই স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে চলে গেছেন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এবার ৮০ লাখ মানুষ রাজধানী ছাড়ছেন বলে জানিয়েছেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তাই রাজধানীর পথঘাট এখন অনেকটা ফাঁকা হলেও বাস, লঞ্চ ও রেল স্টেশনে দেখা গেছে বাড়িমুখো মানুষের প্রচ- ভিড়। বাস-ট্রেন ও লঞ্চে ছাদে ওঠা নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানছে না কেউ। নির্দেশ উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাদে চড়েই বাড়ি ফিরছেন অনেক যাত্রী। কিন্তু ফেরার পথে ফেরিঘাট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ রাজধানী থেকে বের হওয়া সড়কগুলোতে থেমে থেমে যানজটে শিকার হচ্ছেন ঘরমুখো এ মানুষ। এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও নানা রকমের হয়রানির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। যানজট, পরিবহন সংকট, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, যাত্রীদের মালামাল নিয়ে টানাটানি ইত্যাদি সহ্য করেই গ্রামে যাচ্ছেন রাজধানীর মানুষ। পথে পথে নানা দুর্ভোগ আর বিড়ম্বনায় পড়লেও ঈদ করতে গ্রামে ফেরা পরম আনন্দের। ঈদের আনন্দের কাছে এ দুর্ভোগ যেন আনন্দে মস্নান হয়ে যাচ্ছে বলে জানান ঘরমুখো মানুষরা।
সরজমিনে গতকাল রাজধানীর বাস, ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালে ঘুরে একই দৃশ্য দেখা গেছে। রাজধানীর মহাখালী আন্তঃনগর বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা টার্মিনালে ঘরমুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড়। অনেকেই অপেক্ষা করছে নির্দিষ্ট যানবাহনের জন্য। কেউ কেউ বাস এলেই টিকিট কাটবেন বলে জানান। অনেকেই বলেছেন টিকিটের দাম বেশি নেয়ার কথা। মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহসহ উত্তরাঞ্চরের বেশ কিছু বাস চলাচল করে। তাই ঈদের আগ মুহূর্তে বাড়িতে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে শত শত মানুষ। তবে বাস-ট্রেন ও লঞ্চে ছাদে ওঠা নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানছে না কেউ। নির্দেশ উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাসের ছাদে চড়েই বাড়ি ফিরছেন অনেক যাত্রী। নিয়ম অগ্রাহ্য করে ঈদের চাপ সামলাতে বাসের ছাদে যাত্রী তুলছেন পরিবহন মালিকরা। এদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিচ্ছিন্ন জট এবং সিরাজগঞ্জে ২১ কিলোমিটার সড়কে যানবাহনে ধীরগতির কারণে গতকাল নির্ধারিত সময় ঢাকা ফিরতে পারেনি অনেক যানবাহন। তাই পরিবহন সংকটের কারণে রাজধানীর গাবতলী ও কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অনেক যাত্রীদের।
গতকাল সকালে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার বাস কাউন্টারগুলোতে কথা বলে জানা গেছে, টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ এলাকায় যানজটের কারণে তাদের বাসগুলো সময়মতো ঢাকায় পৌঁছাতে পারছে না। সে কারণেই ঢাকা থেকে নির্ধারিত সময়ে ছাড়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে হানিফ পরিবহনের নয়ন নামের একজন চালক জানান, গাইবান্ধা থেকে ঢাকা আসতে সময় লাগে সাধারণত সাত ঘণ্টা। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাদের যে গাড়ি ছেড়েছে, সেটি পৌঁছেছে সকাল ৭টার দিকে। শনিবার সকালের বাসগুলো ছাড়তে তিন থেকে চারঘণ্টা দেরি হয়েছে বিভিন্ন কাউন্টার ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে আবদুর রহমান সুমন নামের নওগাঁর যাত্রী বলেন, 'শনিবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে কাউন্টারে অপেক্ষা করছি, কিন্তু গাড়ি নেই, বলছে জ্যাম। অপেক্ষা ছাড়া আর কি করব?' একই অবস্থা অন্যান্য যাত্রীদেরও।
এ ব্যাপারে হানিফ কাউন্টার ম্যানেজার একেএম রইসুল আলম সবুজ বলেন, "ওই গাড়ি গাজীপুরের চন্দ্রায় জটে আটকে আছে। আমাদের ননএসি বাসগুলো ম্যানেজ করে ছাড়ার চেষ্টা করছি। এসি গাড়ি সময়মতো না পৌঁছানোর কারণে রাতের চারটি গাড়ি সকালে ছেড়েছি। বিভিন্ন জায়গায় জ্যাম থাকায় এই বিলম্ব হচ্ছে।" তিন ঘণ্টা ধরে অপেক্ষায় থাকা শ্যামলী পরিবহনের জয়পুরহাটের যাত্রী কুদ্দুস খান বলেন, "ছাড়ার কথা ছিল ৭টায়, গাড়ি এসেছে পৌনে ৯টার দিকে।"
যানজটের বিষয়ে হাটিকুমরুল হাইওয়ে পুলিশের সার্জেন্ট আবদুল গনি জানান, বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার রাস্তা দুই লেইনের। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগসহ খুলনা বিভাগের কয়েকটি জেলার গাড়ি ওই পথে যায়। ঈদ উপলক্ষে গাড়ির সংখ্যা বেশি থাকায় সেখানে ২১ কিলোমিটার সড়কে গাড়ি চলছে থেমে থেমে।
এদিকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ধেরুয়া রেলক্রসিং, রসুলপুর, এলেঙ্গা, গোড়াই, সুভল্লা, করটিয়া, পাকুল্লায় সড়কে খানাখন্দের কারণে যানবাহনের গতি কম জানান স্থানীয়রা। অপরদিকে ঈদে ঘরমুখো মানুষের যানবাহন চাপের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা ব্রিজ থেকে মুন্সিগঞ্জ, গজারিয়া, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ অংশে রয়েছে তীব্র যানজট। হাইওয়ে পুলিশ, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যানজট নিরসনে কাজ করলেও মেঘনা ব্রিজ থেকে কাঁচপুর ব্রিজ পর্যন্ত নিয়মিত যানজট হচ্ছে। আর এ অংশটিই ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের ভোগান্তির মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে মিয়াবাজার হাইওয়ে ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ সার্জেন্ট মো. ইব্রাহিম জানান, শুক্রবার দিনের বেলায় চট্টগ্রাম-ফেনী থেকে আসা মালবোঝাই সব ভারী যানবাহন ফেরত পাঠানো হয়েছে। রাত ৯টার পর দেখে দেখে ওইসব যানবাহন সিরিয়াল করে ছাড়া হয়েছে। আজও কোন ভারী যানবাহন চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে না। তাই যানজটমুক্ত রয়েছে মহাসড়কের এ অংশ। তবে মুন্সিগঞ্জ, গজারিয়া, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ এ এলাকাগুলোতে গত ২-৩ মাস ধরেই যানজট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এসব এলাকায় এক জায়গাতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন আটকে থাকে। মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন শিল্পকারখানা, বাজার, যত্রতত্র ভারী যানবাহন ফেলে রাখা, সুষ্ঠু ট্রাফিক সিস্টেমের অভাবে মহাসড়কের এ অংশের প্রায় ৩০ কিলোমিটার মানুষের ভোগান্তির মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
এদিকে গত দুদিনের চেয়ে গতকাল ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ও কমলাপুর রেলস্টেশন ছিল মানুষের উপচেপড়া ভিড়। আন্তঃনগর ট্রেনগুলো যথাসময় ছেড়ে গেলেও যাত্রী বোঝাই ছিল অতিরিক্ত। নির্দেশ উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন ও লঞ্চের ছাদে চড়েই বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে অনেক যাত্রীদের। গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ১০০টি লঞ্চ সদরঘাট থেকে ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে ঘাট কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত শুক্রবারের ঈদযাত্রায় সারা দিনে ঘাট থেকে ১২৫টি লঞ্চ ছেড়ে যায়। যেখানে স্বাভাবিক সময় দিনে ৬০ থেকে ৬৫ লঞ্চ ছেড়ে যায়। তবে অতিরিক্ত বোঝাই প্রতিরোধে লঞ্চে যাত্রী ভরার সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে বলে বিআইডবিস্নউটিএ'র সূত্র জানায়। এ ব্যাপারে বিআইডবিস্নউটিএ'র সদরঘাটের যুগ্ম পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, শনিবার গত শুক্রবারের চেয়ে যাত্রীর চাপ বেশি। তবে সদরঘাটের পুরো এলাকায় সিসি টিভির মাধ্যমে মনিটরিং করা হচ্ছে। কোথাও কোন ধরনের অপ্রীতিকর কিছু দেখা গেলে তা সঙ্গে সঙ্গে সমাধান করা হচ্ছে। তবে লঞ্চে অতিরিক্ত বোঝাই প্রতিরোধে যাত্রী ভরার সঙ্গে ঘাট থেকে লঞ্চ ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে সদরঘাটে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে পুলিশ পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানান কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. মওদুদ হাওলাদার। তিনি বলেন, পিক আওয়ারে অর্থাৎ দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সদরঘাট এলাকায় ঢাকা মহানগর পুলিশের ২৩৬ জন পুলিশ সদস্য ডিউটি দেন। অন্য সময়ও শতাধিক পুলিশ থাকে। এছাড়া নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, র‌্যাব সদস্য ছাড়াও বিএনসিসির স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে বলে জানান তিনি।

Source: The Daily Sangbad
Share:

0 comments:

Post a Comment

Facebook

Search This Blog

News Archive

Blog Archive