ঈদে ঘরে ফিরতে ব্যাকুল স্বল্প আয়ের মানুষগুলো ট্রাকের ছাদের ওপর থাকা সিমেন্টের বস্তায় বসেছিলেন। ট্রাক উল্টে সেই বস্তার নিচে চাপা পড়ে প্রাণ গেছে ১৬ জনের। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ছটফট করছেন অনেকে। দুর্ঘটনায় আহত খলিলুর রহমান রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ২১ বছরের যুবক ভাঙা ভাঙা গলায় বর্ণনা দিচ্ছিলেন দুর্ঘটনার। বললেন, পীরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে ট্রাক থেমেছিল। কয়েকজন সেখানে নেমে যান। এরপর আবার ট্রাকটি চলতে থাকে। খলিলুর আরও বললেন, ‘এপাশ-ওপাশ করি হেলিদুলি ট্রাক চলবার থাকে। হামরাও ট্রাকের ওপর দোলাদুলি করবার থাকি। হামরা ভয়ে ট্রাকের ওপর থাকি ড্রাইভারকে চিৎকার দিয়া বলবার থাকি, আস্তে চালান।’
খলিল বলেন, এ কথা বলতে বলতেই বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়ার ১০ মিনিটের মধ্যে ট্রাকটি উল্টে যায়। এরপর আর কিছু জানেন না তিনি। বলেন, ‘চোখ খুলি দেকপার পাই হাসপাতালোত।’
পীরগঞ্জের বাসস্ট্যান্ডে নামার পর ট্রাকটি চালক, না চালকের সহকারী চালিয়েছিলেন, তা জানেন না খলিলুর। তবে বাসস্ট্যান্ডের পর থেকেই ট্রাক হেলেদুলে চলতে থাকে।
খলিলুর প্রাণ গ্রুপের কর্মচারী। বলেন, গাজীপুর থেকে সিমেন্টবোঝাই ট্রাকটি রংপুরের দিকে যাচ্ছিল। তবে ট্রাকে অর্ধেক সিমেন্ট ছিল। গাজীপুরে চাকরি করা পোশাকশ্রমিকসহ অন্যান্য কারখানার ৪৫ জন শ্রমিক ওই ট্রাকের ছাদে ওঠেন। ট্রাক চলতে গিয়ে অনেকবার থামে। রংপুরের পীরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে কয়েকজন নেমে যান। এরপর ট্রাকে যাঁরা ছিলেন, সবাই একই এলাকার। দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ জনের বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চাপারহাট এলাকায়।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার কলাবাগান এলাকায় ট্রাক উল্টে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। তাঁরা গাজীপুর থেকে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছিলেন। ট্রাকের ছাদে চড়ে যাচ্ছিলেন স্বল্প আয়ের লোকগুলো।
আজ শনিবার ভোর পাঁচটা থেকে সাড়ে পাঁচটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত আটজন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১৫ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন-লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চাপারহাট এলাকার দুই ভাই আলমগীর হোসেন (৩০) ও সাদ্দাম হোসেন (২৫), মুনির হোসেন (২২), মোহসীন আলী (২৮), সুবর্ণা (১২), মজনু মিয়া (২২), দেলোয়ার হোসেন (২৫), কালীগঞ্জ উপজেলার উত্তর বত্রিশ হাজারি এলাকার কোহিনুর ইসলাম (৪২), একই এলাকার শহিদুল ইসলাম (৩৫), একই জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার রবিউল ইসলাম (২৮), একই জেলার আদিতমারী উপজেলার আজিজুল ইসলাম (২২), কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার নাসিদা আক্তার (২৫), ময়মনসিংহের ভালুকার জসিমউদ্দিন (৩৮), ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার আনিসুজ্জামান (৩৮) ও তাঁর স্ত্রী সামসুন্নাহার (২৫)।
দুর্ঘটনায় আহত আটজন হলেন খাদিজা, আফরোজা, রহিমা, জামিলা, ময়না, মমিনুল, খলিল ও দুলাল। তাঁদের সবার বয়স ২২ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। তাঁদের মধ্যে খাদিজা আলমগীরের স্ত্রী। তিনি জানান, হতাহত সবার বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিমের ভাষ্য, সিমেন্টবোঝাই ট্রাকটি গাজীপুর থেকে রংপুরের দিকে যাচ্ছিল। ট্রাকের ছাদে সিমেন্টের বস্তার ওপর বসে ঈদে ঘরে ফিরছিলেন স্বল্প আয়ের লোকগুলো। কলাবাগান এলাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে ট্রাকটি রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায়। এতে ছাদে থাকা লোকজন পড়ে গিয়ে সিমেন্টের বস্তার নিচে চাপা পড়েন। ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন ১১ জন। মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে আরও পাঁচজন নিহত হন।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, হতাহত ব্যক্তিরা বেশির ভাগই পোশাকশ্রমিক। ট্রাকটির নম্বর রংপুর ট ১১-০৩২৮।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম ও পীরগঞ্জ বড়দরগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) হাফিজুর রহমান নিহতদের নাম-ঠিকানা নিশ্চিত করেছেন।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় ট্রাক উল্টে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। তাঁরা গাজীপুর থেকে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছিলেন। ট্রাকের ছাদে চড়ে যাচ্ছিলেন স্বল্প আয়ের মানুষগুলো।
আজ শনিবার ভোর পাঁচটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত আটজন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিমের ভাষ্য, সিমেন্টবোঝাই ট্রাকটি গাজীপুর থেকে রংপুরের দিকে যাচ্ছিল। কলাবাড়ি এলাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে ট্রাকটি উল্টে যায়। এতে ছাদে থাকা মানুষ পড়ে গিয়ে সিমেন্টের নিচে চাপা পড়েন। ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন ১১ জন। পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে আরও পাঁচজন নিহত হন।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, হতাহত ব্যক্তিরা বেশির ভাগই পোশাকশ্রমিক।
Source: Prothom alo
0 comments:
Post a Comment