রোজার সময় ইফতার ও সাহরিতে থাকে নানা পদের খাবার। মুখরোচক নানা খাবারের সঙ্গে থাকে বিভিন্ন ভাজাপোড়াও। আর এতেই ঘটে বিপত্তি। অনেক সময় পানিশূন্যতা বা অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু একটু বাছবিচার করে খেলেই এড়ানো যায় এসব শারীরিক সমস্যা। এতে করে রোজায় সারা দিনের না খাওয়ার পরও চাঙা থাকে শরীর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক খুরশীদ জাহান বলেন, কিছু ভাজাপোড়া খাবার তো খাওয়া হয়ই। কিন্তু সারা দিন রোজা রাখার পর অনেকে বেশি পরিমাণে এ ধরনের খাবার খান। এতে করে অনেকের হাইপার-অ্যাসিডিটি হয়, অনেকের আবার পেটের সমস্যা দেখা দেয়। কেউ কেউ ডায়রিয়াতে আক্রান্ত হোন। তাই শর্করা, আমিষ ও পুষ্টিকণার ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খাওয়া প্রয়োজন। বাসায় কম তেলে তৈরি খাবার খাওয়া সবচেয়ে ভালো। তা সম্ভব না হলে ভাজাপোড়া কমিয়ে হালকা খাবার বেছে নিতে হবে। দই, চিড়া, ফল—এসব খাওয়া স্বাস্থ্যকর।
রোজার সময় সারা দিন না খাওয়ার কারণে অনেকের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। দেখা যায়, ইফতারের সময় শরীর অবসন্ন হয় আসে। তাই সাহরি ও ইফতারে পানীয় বেশি করে পান করতে হবে। খুরশীদ জাহান বলেন, লেবু বা ফলের শরবত, ডাবের পানি খেতে হবে। এতে করে শরীর সতেজ হয়ে ওঠে।
ইফতারি আয়োজনে বাইরের তৈরি তেলে ভাজা নানা পদের আধিক্য থাকে। পিঁয়াজু, বেগুনি, ছোলা, চপ প্রভৃতির সঙ্গে সঙ্গে থাকে ফ্রায়েড চিকেনসহ মাংসের নানা পদও। কিন্তু এসব খাবার তৈরির প্রক্রিয়া খুব একটা স্বাস্থ্যকর নয়। খোলা পরিবেশে তৈরির কারণে হতে পারে বিভিন্ন ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। তাই ইফতারের সময় এসব তেলেভাজা খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।
পুষ্টিবিদ অধ্যাপক খুরশীদ জাহান বলেন, ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলা সবচেয়ে ভালো। মুড়ি মাখা ইফতারের অন্যতম একটি পদ। তবে বেশি ভাজাপোড়া খাবার মিশিয়ে মুড়ি মাখা তৈরি না করাই ভালো। একটু ছোলা ও অল্প পিঁয়াজু দিয়ে মুড়ি মাখা যেতে পারে। কিন্তু অনেক কিছু মিশিয়ে তৈরি করলে তা অ্যাসিডিটির সমস্যা তৈরি করতে পারে। এর চেয়ে ফল বেশি করে খেলে তা শরীরে বেশি শক্তির জোগান দেয় এবং তা স্বাস্থ্যকরও।
এ তো গেল ইফতার। এবার আসুন সাহরির কথায়। সারা দিনের রোজা রাখার শারীরিক শক্তি জোগানের জন্য সাহরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে সাহরিতে খুব বেশি কিছু খান না। কিন্তু এতে করে রোজার সময় শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। অধ্যাপক খুরশীদ জাহান বলেন, ভাত, রুটি বা ফল খাওয়া যেতে পারে। দই-চিড়াও হতে পারে ভালো বিকল্প। এমনভাবে খেতে হবে যেন শর্করা, আমিষ বা চর্বিজাতীয় খাবারের মধ্যে ভারসাম্য থাকে। পানীয় খেতে হবে বেশি করে।
তবে সাহরির সময় চা-কফি খেতে বারণ করেন এই পুষ্টিবিদ। তিনি বলেন, চা ডাই-ইউরেটিক পদার্থ। এ ধরনের খাবার শরীর থেকে পানি বের করে দেয়। তাই এসব পানীয় পরিহার করাই শ্রেয়।
Source:Prothom Alo
0 comments:
Post a Comment