Daily bangla news by JasHim News 24 all bd news live 24 hours in this field thanks for watching.

Sunday, July 9, 2017

বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত by JasHim bangla News

পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। পাশাপাশি মধ্যাঞ্চলেও দেখা দিয়েছে বন্যা। বন্যাকবলিত এলাকায় নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। : বগুড়া : বগুড়া অফিস জানায়, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়ে ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে বগুড়ায় সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে এখন বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে  প্রবাহিত হওয়ায় উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় ১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যাকবলিত পরিবারগুলো খাদ্য, বাসস্থান, বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের অভাবে দুর্বিষহ অবস্থায় পড়েছে। : দুর্গত লোকজন জানিয়েছে, সারিয়াকান্দি উপজেলার চন্দনবাইশা, কতুবপুর ও কামালপুর ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের পানিবন্দি মানুষ এখন নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পার্শ¦বর্তী বাঁধে ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছে। সারিয়াকান্দি উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যার পানি প্রবেশ করায় ১৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি হাইস্কুল ও একটি মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। : বগুড়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, বানভাসিদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে সারিয়াকান্দি উপজেলায় ৫০ মেট্রিক টন এবং ধুনট উপজেলায় ৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ।  শনিবার সকালে জেলা প্রশাসক সোনাতলা বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আশঙ্কা তিন দিন যমুনায় পানি বাড়বে ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হবে। : সিরাজগঞ্জ  : স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে (সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষাবাঁধ এলাকায়) বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিন পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।  অন্যদিকে  ১০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চৌহালীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধে তৃতীয় দফা ধসে আরো ৬০ মিটার যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে শনিবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি ২০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। : পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার কাজীপুর, শাহজাদপুর, চৌহালী, বেলকুচি এবং সদর উপজেলার ৫টি উপজেলার ২৮টি ইউনিয়নের চরাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। বন্যাকবলিত মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। : এদিকে যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ি এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ২০০৭ সালে ভেঙে যাওয়ার পর সংস্কার না করায় ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে রানীগ্রাম ও গোনেরগাতী এলাকা বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যাকবলিত মানুষ বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে। : সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইমাম বলেন, বর্তমানে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৫-৭ দিন যমুনা নদীতে আরো পানি বৃদ্ধি পাবে। শহর রক্ষাবাঁধগুলো যাতে ভেঙে না যায় এ জন্য নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বালুর বস্তা ফেলে হচ্ছে। : এদিকে নির্মাণাধীন সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা ও টাঙ্গাইল এবং নাগরপুর রক্ষাবাঁধে ফের ধস দেখা দিয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল বাঁধটির আজিমউদ্দির মোড় এলাকায় প্রায় ৬০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। : বাঁধধসের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে চৌহালী, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চৌহালী আলিয়া মাদ্রাসা, বিএম কলেজ, বালিকা বিদ্যালয়সহ বেশকিছু স্থাপনা। ভাঙন ঠেকাতে বালুভর্তি জিওব্যাগ ডাম্পিং চালিয়ে যাচ্ছে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড। : চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদেকুর রহমান জানান, নদীভাঙন থেকে টাঙ্গাইল, নাগরপুর ও চৌহালী রক্ষাবাঁধ ১০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন বাঁধের আজিমউদ্দি মোড় অংশে শুক্রবার রাত থেকে হঠাৎ করেই ধস দেখা দেয়। শনিবার সকাল পর্যন্ত বাঁধটির প্রায় ৬০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। : পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সরাতৈল থেকে দক্ষিণে নাগরপুর উপজেলার পুকুরিয়া, খগেনের ঘাট, সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার ঘোরজানের চেকির মোড়, আজিমুদ্দি মোড়, খাসকাউলিয়া, জোতপাড়া পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার এলাকা রক্ষায় ১০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এ বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০১৫ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে বর্তমানে যার ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে বাঁধটির বিভিন্ন অংশে ৬ বার ধস দেখা দিয়েছে। : এ নিয়ে নির্মাণাধীন এ বাঁধটিতে চলতি বছরেই ৬ষ্ঠ বারের মতো ধস দেখা দিল। এর আগে এর আগে ২ ও ১৬ মে, ৮ ও ২৩ জুন এবং ৩ জুলাই এ বাঁধের বিভিন্ন অংশ ধসে যায়। : টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ বলেন, নির্মাণাধীন বাঁধটি শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ৫০ মিটার ধসে গেছে। তবে ভাঙন রোধে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ ধস দেখা দিয়েছে বলে জানান তিনি। : তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে বাঁধটির সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প পরিচালক আমিনুল ইসলাম, টাস্কফোর্সের প্রধান কাজী তোফায়েল হোসেনসহ মনিটরিং সেলের কর্মকর্তাবৃন্দ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে সংস্কার কাজ তদারকি করছেন। : ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি জানান, জামালপুরেরর ইসলামপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। তিস্তার পানি নেমে আসায় এবং উজানের পাহাড়ি ঢলে ইসলামপুরে যমুনা নদীতে বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। : বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে শনিবার সকালে যমুনার পানি বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১২ সেন্টিমিটার পানি। ফুঁসে উঠে যমুনার পানি বিস্তীর্ণ জনপদে হু হু করে প্রবেশ করছে। : বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জের চুকাইবাড়ী, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বসতভিটা, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্যার্তরা উঁচু রাস্তা, আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। : বন্যার্তদের জন্য ইসলামপুরে পশ্চিমাঞ্চলে ৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জামালপুরের সংরিক্ষত আসনের মহিলা সংসদ সদস্য মাহজাবিন খালেদ বেবী শুক্রবার বন্যাকবলিত ইসলামপুরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। : বন্যাকবিলত এলাকায় এখনো কোনো ত্রাণসামগ্রী পৌঁছেনি বলে বানভাসি মানুষের অভিযোগ। : কাজীপুর : কাজীপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে কাজীপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। সিরাজগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত যমুনা কাজীপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ১৬ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেই সাথে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। বন্যায় ঐতিহ্যবাহী ঢেকুরিয়া হাট তলিয়ে গেছে। বিলচতল, ঢেকুরিয়া, শ্রীপুর, সুতানারা, মল্লিকপাড়া, বদুয়ারপাড়া, দাদবোরা, খিরাইকান্দি, খাসরাজবাড়ি, ভেটুয়া, বাশজান, ভাঙ্গারছেও গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নাটুয়ারপাড়া চরের পূর্বপাশের বাড়িঘর ভাঙনের কবলে পড়েছে। লোকজন তাদের বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। খাসরাজবাড়ি, জজিরা, মল্লিকপাড়া, মাজনাবাড়ি চরের মানুষ ভাঙনের শিকার হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এদিকে প্রায় ৮০ লাখ টাকা খরচ করে জনগণের নির্মাণ করা মনসুরনগর ইউনিয়নের মাজনাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়সংলগ্ন বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধটি চরম হুমকির মুখে পড়েছে। ১ হাজার ৯শ ফুট দৈর্ঘ্যরে এই বাঁধটি ভাঙলে প্রায় দেড় হাজার বসতবাড়ি মুহূর্তে বিলীন হয়ে যাবে বলে জানান ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক রাজমহর। মাজনাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন জানান, এই বাঁধের ফলে স্কুলসহ অনেক স্থাপনা বন্যা-ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাচ্ছে। ফলে বাঁধটি নির্মাণে সরকারি সহায়তা জরুরি। এছাড়া বন্যায় চরাঞ্চলের নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তায় ধস নেমেছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খোশ মাহমুদ জানান, গতকাল থেকে এ পর্যন্ত রাস্তার অর্ধেকটা ধসে গেছে। ধস না রোধ করলে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে পারবে না। ফলে তাদের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা দেয়া কঠিন হয়ে যাবে। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন জানান, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে। : রূপগঞ্জ : রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কয়েকদিনের টানা অতি বর্ষণের ফলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জলাবদ্ধতার কারণে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জলাবদ্ধতার পানিতে হেঁটে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করছে। শিল্পাঞ্চল খ্যাত রূপগঞ্জের শ শ ডায়িং, স্পিনিং, প্রিন্টিং, টেক্সটাইল, জুট, চামড়া, মেলামাইন, সিরামিক, সাবান ফ্যাক্টরি, স্টিল, রি-রোলিং, ওয়েল রিফাইনিং ও হাড্ডি পেশাইসহ বিভিন্ন কারখানার বর্জ্য ক্যানেলগুলোতে ফেলার কারণে অসহনীয় পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। এসব কারখানার বর্জ্য পানি আর জলাবদ্ধতার পানিতে পুরো এলাকা এখন একাকার। ঘর থেকে বেরুলেই বিষাক্ত জলাবদ্ধতা পানি। ছোট শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও নানা রকম পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। : এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদী সেচ প্রকল্প, রূপগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিসহ রূপগঞ্জের ভুলতা, মর্তুজাবাদ, সোনাব, কৈরাব, মাঝিপাড়া, ভান্ডাবো, আউখাবো, গোলাকান্দাইল, ইসলামপুর, ইসলামবাগ, নাগেরবাগ, তেতলাবো, মাসাবো, বরপা, সুতালড়া, কর্ণগোপ, নার্সিংগল, গন্ধর্বপুর, মৈকুলী, কামালনগর, বরাব, রূপসী, শিংলাবো, আমালাবো, কালী, ডুলুরদিয়া, মুইরাবো, কালাদী এলাকার নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ বাড়িতে জলাবদ্ধতার পানি। এসব এলাকার সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকের খামারের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। জলাবদ্ধতার পানির কারণে ঘরে ঘরে পানিবাহিত রোগ জ্বর, সর্দি, ঘা, চুলকানিসহ নানা রোগব্যাধি দেখা দেয়ায় জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।  : ভুলতা জেনারেল হাসপাতালের এমডি ডা. বশিরউদ্দিন বাচ্চু জানান, দ্রুত জলাবদ্ধতার পানি রোধ করা না গেলে কলেরা, ডায়রিয়াসহ নানা কঠিন রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিতে পারে। জলাবদ্ধতার পানিতে স্থানীয় মিল-কারখানার বর্জ্য মিশে যাওয়ায় পরিবেশ বিনষ্টসহ রোগ-বালাই দেখা দিয়েছে। এ জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। : টাচ্ স্টোন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ মো. সুমন মিয়া বলেন, ছোট শিশুরা জলাবদ্ধতার পানিতে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করছে। এতে নানা রোগের সৃষ্টি হতে পারে। বড়দেরও জলাবদ্ধতার এসব বর্জ্য পানিতে খুজলি পাচরাসহ নানা রোগব্যাধি দেখা দিয়েছে। : ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আরিফুল হক ভুঁইয়া বলেন, নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদী সেচ প্রকল্প, রূপগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেলগুলো স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখলে রাখায় দ্রুত পানি নিষ্কাশন করা যাচ্ছে না। দ্রুত এসব সেচ ক্যানেলগুলো দখল মুক্ত করে জলাবদ্ধতার পানি নিষ্কাশন করা হবে। : উলিপুর : উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদী অববাহিকার ৪ ইউনিয়নের চর ও দ্বীপচরের প্রায় ১৫টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়েছে। এসব গ্রামের বন্যাকবলিত মানুষজন গবাদিপশু নিয়ে পাশর্^বর্তী উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৩ গ্রামের দেড় শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। গতকাল উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের গাবুরজান কামারটারী, শ্যামপুর, চরদাগারকুটি, চরগুজিমারী, নয়াদারা, নীলকন্ঠ, তাঁতিপাড়া, বাবুরচর, মাঝিপাড়া, হাতিয়াগ্রাম ও চর মোহাম্মদপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামগুলোর বেশির বাড়িতে পানি ছুঁই ছুঁই করছে। বাড়ির লোকজন পার্শ^বর্তী উঁচু জায়গায় গবাদিপশুসহ আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে কলাগাছের ভেলা তৈরি করে বাড়ির উঠানে রেখে দিয়েছে। বন্যার পানিতে অনন্তপুর দাগারকুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চরবাগুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ডুবে গেছে। ফলে বিদ্যালয় দুটিতে ক্লাস বন্ধ রয়েছে। অনেকের ধারণা, ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে এসব ইউনিয়নের চরের বেশিরভাগ গ্রাম তলিয়ে যাবে। মাঝিপাড়া গ্রামের দিনবন্ধু জানান, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে পানিতে তলিয়ে যাবে গ্রামটি। তবে গ্রামের মানুষজন কলাগাছের ভেলা ও নৌকা বাড়ির উঠানে রেখে দিয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় গ্রামবাসী আগের চেয়ে অনেক সচেতন। হাতিয়া বাবুরচর গ্রামের আলেকনুর জানান, গবাদিপশু নিয়ে বেশিরভাগ মানুষ বেকায়দায় রয়েছে। গবাদিপশু উঁচু স্থানে রেখে দিলেও খাদ্য জোগান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, বিন্ধুরচর, মশালেরচর, বালাডোবা, ফকিরেরচর, আলআমিন, ইসলামপুর, মাস্টারপাড়াসহ বেশিরভাগ গ্রাম তলিয়ে গেছে। গত ৭ দিনের ব্যবধানে আলআমিন বাজার,  উত্তর বালাডোবা ও দক্ষিণ বালাডোবা গ্রামের প্রায় ১৫০টি বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙনকবলিত মানুষজন পাশর্^বর্তী উঁচু ভিটায় আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া সাহেবের আলগা ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা তলিয়ে যাওয়া ৫ সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বুড়াবুড়ি ইউনিয়ের ব্রহ্মপুত্র চর অববাহিকর ৭টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ ৪ ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানান। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খন্দকার মো. ফিজানুর রহমান জানান, বন্যা মোকাবিলায় সব রকম প্রস্তুতি রয়েছে। : কুড়িগ্রাম : স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম জানান, কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এছাড়া অন্যান্য নদ-নদীর পানি সামান্য বেড়েছে। জেলার নদ-নদীগুলো সরাসরি ভারত থেকে প্রবাহিত হওয়ায় উজান থেকে বয়ে আসা বন্যার পানিতে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। গত ৪ দিনে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা অববাহিকায় প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। : কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, শনিবার চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এছাড়া নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৪ ঘন্টায় পানি বেড়েছে ৬ সেন্টিমিটার, কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বেড়েছে ২ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীতে ৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। : বন্যার ফলে কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, চিলমারী, রাজারহাট ও রাজিবপুর উপজেলার নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানান, কুড়িগ্রাম সদরে ২০ হাজার, উলিপুরে ১৭ হাজার, চিলমারীতে ২০ হাজার, রাজীবপুরে ৫ হাজারসহ অন্যান্য উপজেলা মিলিয়ে প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। : বন্যার ফলে সদর উপজেলায় ঘোগাদহ প্রথম আলোরচর প্রাথমিক বিদ্যালয়, পার্বতীপুর সর: প্রা: বিদ্যালয় ও যাত্রাপুর সর: প্রা: বিদ্যালয়, উলিপুরে চরবাগুয়া সর: প্রা: বিদ্যালয় ও দাগারকুটি সর: প্রা: বিদ্যালয়, চিলমারীতে ২নং সর: প্রা: বিদ্যালয় ও মনতোলা সর: প্রা: বিদ্যালয়, রাজীবপুরে নয়ারচর সর: প্রা: বিদ্যালয় ও ভেলামারী সর: প্রা: বিদ্যালয়ে পানি ওঠায় লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। : এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার চৌধুরী জানান, ওইসব স্কুলে বিকল্প পাঠদানের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। : কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মকবুল হোসেন জানান, সৃষ্ট বন্যায় এখন পর্যন্ত বীজতলা ও ফসল নিমজ্জিত হওয়ার সঠিক তথ্য নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। : সিভিল সার্জন ডা. আমিনুল ইসলাম জানান, বন্যার ফলে শনিবার জরুরি সভার মাধ্যমে ৮৮টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া সকল স্বাস্থ্যকর্মীকে মাঠ পর্যায়ে প্রস্তুতি নিয়ে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমাদের কাছে বন্যাকালীন সকল রোগের পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ আছে। : জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মো. ফেরদৌস খান জানান, ঠিক সেভাবে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ইউনিয়ন ও উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে তৃণমূল পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমাদের কাছে ৫ লাখ টাকা ও দেড় শ মেট্রিক টন চাল মজুদ রয়েছে। এছাড়া ১৫ লাখ টাকা ও ৫শ মেট্রিক টন চাল ও ৩ হাজার বান্ডিল ঢেউটিন চাওয়া হয়েছে। কাজেই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। 

Source: Daily Dinkal
Share:

0 comments:

Post a Comment

Facebook

Search This Blog

News Archive

Blog Archive