Daily bangla news by JasHim News 24 all bd news live 24 hours in this field thanks for watching.

Friday, April 28, 2017

আলো ছড়ানো নাবিলা By Jashim News


আয়নাবাজির জন্য সেই অর্থে আমরা নায়িকা খুঁজেছিলাম বলে ঠিক মনে পড়ে না। হৃদির মধ্যে একধরনের শান্ত উপস্থিতি আমাদের চাওয়া-পাওয়া ছিল। আর চরিত্রের মধ্যে একটা শিক্ষিত শহুরেপনার অবয়ব থাকতে হবে, সেই ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত ছিলাম। আমাদের এই দুই চাওয়া-পাওয়া যদি মেলান, তাহলে মাসুমা রাহমান নাবিলাকে দেখতে পাবেন। নাবিলার সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে যে ও জানে ও কী জানে না। সে তার সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। সৎ, পরিশ্রমী ও কমিটেড। উপস্থাপক হিসেবে মঞ্চে উজ্জ্বল নাবিলা খুব ভালো জানত অভিনয় তার পরিচিত জায়গা নয়, তাই অমিতাভের (পরিচালক অমিতাভ রেজা চৌধুরী) ওপর শতভাগ নির্ভরতা ছিল তার। অমিতাভকে গুরু মেনে যে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে গেছে নাবিলা, তারই স্বীকৃতি এবারের মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে নাবিলার সেরা চলচ্চিত্র অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতা। ছোটবেলায় বেশ কয়েক বছর দেশের বাইরে কাটানোর কারণে এই শহরের অনেক অলিগলিই নাবিলার অচেনা। তাই আয়নাবাজিতে পুরান ঢাকায় তার পদচারণা কিংবা বুড়িগঙ্গার দিকে তাকিয়ে তার বিস্মিত হওয়া আসলে মেকি নয়। সব মিলিয়ে হৃদি চরিত্রের জন্য নাবিলার চেয়ে ভালো কেউ হতে পারত বলে আমার এখন আর মনে হয় না। নাবিলার যে ব্যাপারটা আমার প্রথমত নজর কেড়েছে, সেটা হচ্ছে, ওর মধ্যে কোনো বিষয়েই অতি উৎসাহ নেই। এটা আজকের এই মার্কেটিং আর ব্র্যান্ডিংয়ের যুগে খুব দুর্লভ। সবাই কোনো না কোনোভাবে অল্পবিস্তর সব বিষয়েই অতি উৎসাহ দেখানোর চেষ্টা করে এবং সেটা অধিকাংশ সময়েই ভীষণ বিরক্তিকর। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, ওর শেখার আগ্রহ অনেক। ও ধৈর্য ধরে শিখতে চায়, ভালো কাজের জন্যও সময় দিতে রাজি আছে, কোনো তাড়াহুড়ো নেই। আয়নাবাজির এত বড় সাফল্যের পরও নাবিলা কিন্তু ‘খুব ব্যস্ত নায়িকা’ হয়ে পড়েনি। আমার ধারণা, ও এখন সময় নিয়ে চারদিকটা বুঝতে চায়, পরবর্তী যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে। মোটামুটি কোনো কিছুর চেয়ে সবচেয়ে ভালোটার ব্যাপারে ওর আগ্রহ অনেক বেশি, তাই ওর গড্ডলিকায় গা ভাসিয়ে দেওয়ার আশঙ্কাও কম। নিজের সীমাবদ্ধতা বুঝে এবং মেনে নিয়ে নাবিলা যদি এই সরল পথে চলতে পারে, তাহলে এই ইন্ডাস্ট্রিতে ও লম্বা ইনিংস খেলবে বলেই আমার মনে হয়। তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় নাবিলা, একটু ছোট বয়সেই বাবাকে হারিয়েছে। এ কারণেই বোধ হয় ও বয়সের তুলনায় একটু বেশিই ম্যাচিউরড। আনন্দ বা দুঃখ কোনোটারই প্রকাশে খুব একটা পার্থক্য নেই। যেই মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রথম দেশে ফেরে, তার বাংলা এত পরিষ্কার আর গোছানো হয় কীভাবে, সেটাও একটা বিস্ময়। এতে পারিবারিকভাবেই বাংলার চর্চার প্রমাণ পাওয়া যায়, যেটা ছোটবেলা থেকেই তাকে একটা দেশীয় সংস্কৃতির আবহ দিয়েছিল বলে বোধ হয়। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর নাবিলার পড়াশোনার ব্যাপারে আগ্রহ আমাদের ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রির জন্য আশাজাগানিয়া। আমরা যদি ধরেই নিই সাধারণ মানুষ তারকাদের কাছ থেকে দেখে শেখে, তাহলে নাবিলাকে দেখে শেখাটা মন্দ হবে না। যে দেশের মোট জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশেরও বেশি মানুষের বয়স ৩৫ বছরের নিচে, সেই দেশে নাবিলারাই আমাদের আশা-ভরসা। সেই আশার পালে খুব জোর হাওয়া লাগুক, নাবিলাদের হাত ধরে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, বাঙালির সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বময়। বাংলাদেশের জয় হোক। লেখক: আয়নাবাজি ছবির কাহিনিকার ও অন্যতম প্রযোজক
Source-Prothom alo
Share:

0 comments:

Post a Comment

Facebook

Search This Blog

News Archive