বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের মধ্যে মোটরযান চুক্তি (বিবিআইএন-এমভিএ) থেকে সরে দাঁড়াল ভুটান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ভারতের দ্য হিন্দু পত্রিকার এক প্রতিবেদনে আজ শুক্রবার এ কথা বলা হয়েছে।
হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, এই উপ-আঞ্চলিক মোটরযান চুক্তির ক্ষেত্রে ভারতের পরিকল্পনা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। কারণ, গতকাল বৃহস্পতিবার ভুটান সরকার জানিয়ে দিয়েছে যে তারা এ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে প্রস্তুত নয়। বিবিআইএন-এমভিএ নামের এ চুক্তিটি ভুটান ছাড়া বাকি সদস্য ভারত, বাংলাদেশ ও নেপালকে এগিয়ে নিতে আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
থিম্পুর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ভুটানের কোনো বাধ্যবাধকতা ছাড়াই তিন সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে চুক্তি এগিয়ে নিতে রয়্যাল সরকার সম্মতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘মোটরযান চুক্তিসহ (বিবিআইএন-এমভিএ) ভুটান সরকার বিবিআইএনের (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল) প্রক্রিয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ভুটান এরই মধ্যে ভারতকে জানিয়ে দিয়েছে যে দেশটির পার্লামেন্টে বিরোধিতার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেরিং টবগে সরকার চুক্তিটি অনুমোদন করাতে পারেননি। এ ছাড়া আগামী বছর দেশটির সাধারণ নির্বাচনের কারণে ‘এই মুহূর্তে’ এ ধরনের চুক্তিটি পাস করাতে গিয়ে কোনো রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়ে চায় না ভুটান সরকার।
ভুটানের সরকারবিরোধী আইনপ্রণেতাদের আশঙ্কা, বিবিআইএন চুক্তি তাদের পরিবেশ ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তা ছাড়া অন্য তিন দেশের যানবাহনকে অবাধ চলাচলের সুযোগ দেওয়া হলে তা ভুটানে বেকারত্ব সৃষ্টি করতে পারে।
২০১৫ সালে ১৫ জুন এ চুক্তি সই হয়। এরপরে গত বছরের নভেম্বরে বিবিআইএন-এমভিএ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য ভুটানের পার্লামেন্টে তোলা হয়েছিল। কিন্তু ১৫টি সুনির্দিষ্ট আপত্তির কথা জানিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেন আইনপ্রণেতারা।
এদিকে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের মধ্যে মোটরযান চুক্তি (বিবিআইএন-এমভিএ) বাস্তবায়নে নয়াদিল্লি সম্ভবত ধীরে চলো নীতিতে চলতে চায়। চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভুটানের স্থানীয় পরিবহন সংস্থা ও ব্যবসায়ীরা। এ ব্যাপারে ভুটান সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে চায় না ভারত। ভারতীয় বিশেষজ্ঞ ও সরকারের একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, এতে আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়তে পারেন ভুটানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধানে আগ্রহী।
Source:Prothom alo
0 comments:
Post a Comment